আকাশভরা সূর্য-তারা
+++++++++++±++++±++±++±±+++++


আকাশভরা সূর্য-তারা, বিশ্বভরা প্রাণ,
তাহারি মাঝখানে আমি পেয়েছি মোর স্থান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান॥
                           --রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

আদিম মানুষেরা রাতের অন্ধকারে অনন্ত নক্ষত্র রাশির দিকে তাকিয়ে বিস্ময়ে হতবাক হতো।
সেই একই বিস্ময় নিয়ে এখনো বিজ্ঞানীরা মহাকাশের দিকে তাকান। প্রশ্ন করেন নিজেদেরকে । অনন্ত বিস্তৃত মহা বিশ্বের রহস্যের কিনারা এখনো করা সম্ভব হয়নি।
        
আমাদের সূর্য যে ছায়াপথে সেখানে নক্ষত্র আছে প্রায় ২৫–৪০ হাজার কোটি। আর হাবল টেলিস্কোপ দিয়ে যে আন্দাজ পাওয়া যাচ্ছে, তার থেকে বিজ্ঞানীরা বলছেন দৃশ্যমান মহাবিশ্বে এ রকম ছায়াপথ বা গ্যালাক্সির সংখ্যা হতে পারে ১০০ থেকে ২০০ লাখ কোটি।

কিন্তু এগুলো তো কেবল কিছু সংখ্যা। আসলে এই মহাবিশ্ব কত বড়?

আলো হচ্ছে সবচেয়ে দ্রুতগতির। এই আলো এত দ্রুত চলে যে আলোর গতিতে চলতে পারলে এক সেকেন্ডে পৃথিবীকে সাড়ে সাতবার ঘুরে আসা যাবে। আর এই আলোর গতিতে আমাদের ছায়াপথ আকাশগঙ্গা পার হতে লাগবে দেড় লাখ বছর। এখন পর্যন্ত পাওয়া হিসাবে আলোর গতিতে গেলে পুরো মহাবিশ্ব পার হতে লাগবে ৯৩০০ কোটি বছর!

এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে মানুষ এখন পর্যন্ত আর কোনো প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। তাহলে কী এই মহা বিশ্ব কেবলই প্রাণহীন অপচয়?

প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে এই মহাবিশ্বের জন্ম  হয় বিগ ব্যাং, বাংলায় যাকে বলা যা মহাবিস্ফোরণ এর মাধ্যমে।
২০১৩ সালে কেপলার স্পেস মিশনের প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণ করে চমকে ওঠেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দেখলেন, কেবল আমদের ছায়াপথেই সূর্যের মতো নক্ষত্রের বাসযোগ্য এলাকাতে গ্রহের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার কোটি। আর আমাদের ছায়াপথে কেবল পৃথিবীর মতো উষ্ণ আরামদায়ক গ্রহের সংখ্যা হতে পারে ১ হাজার কোটি! এগুলোতে জল থাকতেও পারে, যা প্রাণের পূর্বশর্ত। সূর্যের মতো নক্ষত্রগুলোর প্রতি চারটির একটিতে পৃথিবীর মতো গ্রহ থাকতে পারে।

আজ রাতে যদি আপনি আকাশের দিকে তাকান, তাহলে ভাববেন যে তারাগুলো দেখছেন এদের ২০ থেকে ৫০ শতাংশ তারার পৃথিবীর মতো গ্রহ আছে। সেই গ্রহগুলোর কোনো একটাতে হয়তো আপনার মতো কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী আকাশের দিকে তাকিয়ে আপনার মতোই ভাবছেন—আর কোথাও কি প্রাণ আছে?